সাবেক দুই এমপিসহ ১১৯ জনকে আসামী করে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারে আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইল মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আল-সাবুর নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যা মামলায় ঢাকা ১৯ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১১৯ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত ১০ টা ২০ মিনিটে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহত শিক্ষার্থী আল-সাবুরের চাচাতো ভাই সাহিদ হাসান মিঠু। আল-সাবুর নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের নায়েদ জাকিরের ছেলে। সে জামগড়ার শিমুলতলায় পরিবারের সঙ্গে থেকে জামগড়া শাহীন স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো।

মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আল-সাবুর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য তার ভাড়া বাসা শিমুলতলা থেকে বাইপাইলে যায়। দুপুর ২টার দিকে মামলার বাদী খবর পান তার ভাই আল-সাবুর মৃত অবস্থায় বাইপাইল মোড়ে পড়ে আছে। লোকজন নিয়ে বাইপাইল মোড়ে গিয়ে দেখেন তার ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত নিথর দেহ পড়ে আছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ জানান, শুক্রবার রাতে ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার বাদী মিঠু বলেন, আমরা সাবুরের মরদেহ উদ্ধারের পর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ঘটনার দিন এক থেকে দেড় হাজার আন্দোলনকারী বাইপাইল মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও আসামিরা দেশি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীসহ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই এলোপাথাড়ি পিটিয়েছে ও গুলিবর্ষণ করেছে। আসামিদের মারপিট ও গুলিবর্ষণে আমার ভাই আল সাবুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে আমার ভাইকে গণহারে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। পরে নিহতের পিতা নায়েদ ছেলেকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়ি মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করেন।

মামলার আসামি হলেন ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডেন্ডাবর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫৫), আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য টংগাবাড়ি এলাকার মৃত আনোয়ার জংয়ের ছেলে তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৫৪), পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান (৬১), আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন মাদবর (৫৮), ইয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভূইয়া (৫০), সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার (৭০) ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার, যুগ্ন আহ্বায়ক মঈনুল ভূইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জু দেওয়ান, রাজু দেওয়ান, উজ্জল ভুইয়া, সুমন ভুইয়ার বোন জামাই জামাই রুবেল, আরিফ মাদবরসহ ১১৯ জনকে আসামী করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *